এক লেগ স্পিনারের ঘূর্ণিজাদুতে ১৯৯৬ সালে লর্ডস জিতেছিল পাকিস্তান। ২০ বছর পর লর্ডসে আরেকটি টেস্ট জিততে আরেক লেগ স্পিনারকেই লাগল পাকিস্তানের। সিরিজের প্রথম ম্যাচের চতুর্থ দিনেই ইংল্যান্ডকে ৭৫ রানে হারিয়ে দিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের বেধে দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যের দিকে ছুটে ইংল্যান্ড থেমে গেছে ২০৭ রানে।
দুই দশক পর ক্রিকেট তীর্থ জয় করতে বড় ভূমিকা রাখলেন লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ। তাতে আপত্তি না করলেও একটু অভিমান করতে পারেন পাকিস্তানের তিন বাঁহাতি পেসার। ইংল্যান্ড বধে ইয়াসিরের চেয়ে তাঁদের ভূমিকাও যে কম ছিল না আজ। ১৯৯৬ সালে লর্ডস জয়ের নায়ক ছিলেন মুশতাক আহমেদ, পার্শ্বনায়ক ছিলেন ওয়াকার ইউনিস। এবার পার্শ্ব নায়ক তিন পেসার—রাহাত, আমির,ওয়াহাব।
তবে পাকিস্তানের বোলারদেরই একক আধিপত্য ছিল এমনটা বলা হয়তো ঠিক হলো না। দায় আছে ইংলিশ ব্যাটিংয়েরও। লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের অবস্থা বোঝাতে গার্ডিয়ানের একটি বাক্যই যথেষ্ট, ‘ব্রিটেনের রাজনীতি ফিরে গেছে ১৯৭৩ সালে আর ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ১৯৯৬ সালে। লেগ স্পিন ও পায়ের পাতা লক্ষ্য করে ছোড়া ইয়র্কার নিয়ে এসেছে পাকিস্তান, ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কাছে যার কোনো জবাব নেই।’
পায়ের পাতা লক্ষ্য করে ইয়র্কার মোহাম্মদ আমির করলেও ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন আসলে রাহাত আলী। ইংল্যান্ডের ২য় ইনিংসের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে ফেরালেন তিনি। প্রথম চারও হতে পারত। জেমস ভিন্সের ক্যাচটি হাতছাড়া করলেন ইউনিস খান। শেষ পর্যন্ত ভিন্স আউট হলেন আরেক বাঁহাতি পেসার ওয়াহাব রিয়াজের বলে।
তখনো উইকেটের দেখা পাননি ইয়াসির। গ্যারি ব্যালান্স ও মঈন আলীর দুটি অমার্জনীয় শটে গেল সে ঝামেলা। চা-বিরতির আগেই ইংল্যান্ডের স্কোর ৬ উইকেটে ১৩৯।
এরপরই দেখা মিলল ইংল্যান্ডের সেরা জুটির। ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে জনি বেয়ারস্টো ও ক্রিস ওকস সপ্তম উইকেটে গড়লেন সবচেয়ে বড় ৫৬ রানের জুটি। ১৯০ বলের ওই জুটিতেই অবিশ্বাস্য এক জয়ের স্বপ্ন উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল ইংলিশদের মনে। তবে সেই স্বপ্নটা ভেঙে চুরমার হলো বেয়ারস্টোর এক বাজে শটে। ১৯৫ রানে এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ফেরার ১২ রানের পরেই শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ডের সব প্রতিরোধ। এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ উইকেটও হয়ে গেল ইয়াসিরের। বেয়ারস্টোর পর ওকসকেও ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
No comments:
Post a Comment